ঠাকুরগাঁও জেলার টাঙ্গন ব্যারেজ, বুড়ি বাঁধ ও ভুল্লি বাঁধ সেচ প্রকল্পসমূহ পুনর্বাসন, নদীতীর সংরক্ষণ ও সম্মিলিত পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণ” শীর্ষক প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।

এতে করে বিদ্যমান সেচ প্রকল্পসমূহ পনর্বাসনের মাধ্যমে বর্তমানে সেচ প্রদানকৃত ৭ হাজার হেক্টর কৃষিজমি ও সম্মিলিত পানি নিয়ন্ত্রণ কাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে ১৩ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় আসবে।

ঠাকুরগাঁও বাপাউেবো পওর বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১জুলাই, ২১ থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২৩ পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার নদী খনন কাজ খুব দ্রুত গতিতে চলছে। ইতিমধ্যে মাটি কাটার কাজ প্রায় শেষের দিকে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সারফেস ওয়াটার ব্যবহারের ফলে একদিকে যেমন গ্রাউন্ড ওয়াটারের উপর চাপ কমবে ঠিক তেমনি সেচের জন্য যে অতিরিক্ত জ্বলানী প্রয়োজন হতো তা সাশ্রয় হবে।

সেচ ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার ফসলের নিবিড়তা ২৪৫শতাংশ উন্নীত করনের মাধ্যমে বাৎসরিক প্রায় ১৫ হাজার ৮শ মেট্রিট টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন হবে যার বাজার মূল্য প্রায় ৫৫ কোটি টাকার মত। আবার মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও জীব বৈচিত্র রক্ষা সহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করা; ৪৫ কি: মি: নদী পুন:খননের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি এবং ৩ দশমিক ৩০ কি: মি: নদীতীর সংরক্ষণ কাজের মাধ্যমে বিভিন্ন অবকাঠামো নদী ভাঙ্গন হতে রক্ষা করবে।

তীরে বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে পরিবেশের বিরুপ পভাব হতে প্রকল্প এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ভুল্লি বাঁধ এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, শুস্ক মৌসুমে এ এলাকার জমিগুলো পানিশুন্যতায় থাকে। এ অবস্থায় নদী খননের ফলে শুস্ক মৌসুমে পানি জমে থাকবে। এতে করে আমাদের বিভিন্ন খাদ্যশস্য ফলানোর ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা রাখবে।

এছাড়াও নদীতে মৎস আহরন করে মাছের চাহিদা পূরণ হবে বলে মনে করি। ঠাকুরগাঁও বাপাউবো পওর বিভাগের নিবাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, প্রকল্প সমাপ্ত হলে ২ হাজার ৭শ হেক্টর জমির প্রভাবে ১ হাজার ৫শ হক্টর জমি সেচের আওতায় আসবে। শুস্ক মৌসুমে এ জমিগুলো সেচ নিয়ে সমস্যায় পরবে না। নদী তীরে একটু পার রেখে বাকি মাটি সরিয়ে নেওয়া হবে।

সেই পারে গাছ লাগানো হবে। ইতিমধ্যে ২০ লাখ টাকার বালু বিক্রির টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে। এই প্রকল্পে ৩ জন ঠিকাদার ১৫ কি: মি: করে মোট ৪৫ কিলোমিটার নদী খননের কাজ করছেন। এর মধ্যে বরিশালের মের্সাস কহিনুর এন্ড একেএ জেভি, ২য় জন ফেনির ও ৩য় জন খুলনার আমিন এন্ড কোম্পানী।

প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। সারফেস ওয়াটার ব্যবহারের ফলে একদিকে যেমন গ্রাউন্ড ওয়াটারের উপর চাপ কমবে ঠিক তেমনি সেচের জন্য যে অতিরিক্ত জ্বালানী প্রয়োজন হতো তা সাশ্রয় হবে। অন্যদিকে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও জীববৈচিত্র রক্ষা সহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় এ প্রকল্পটি গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভুল্লিরবাধে ৪৫ কিলোমিটার নদী খনন প্রকল্পটি ১ জুলাই, ২১ থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২৩ পর্যন্ত সময়কাল ধরা হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ কোটি টাকা। কাজটি বাস্তবায়ন করছে ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ড।